Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

এইচএসসি এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২১ সমাজকর্ম (৫ম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৩।। ronyahmed76



 এইচএসসি এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২১ সমাজকর্ম (৫ম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৩।। ronyahmed76

 


এইচএসসি এসাইনমেন্ট সমাধান/উত্তর ২০২১ সমাজকর্ম (৫ম সপ্তাহ) এসাইনমেন্ট -৩

(ক) শিল্পবিপ্লবের ধারণাঃ 


ঐতিহাসিক ও অর্থনীতিবিদগণ শিল্প-বিপ্লবের সংজ্ঞা সম্পর্কে বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। এসব মতকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। একদল ঐতিহাসিক শিল্প বিপ্লবকে এমনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন যাতে আঠার শতকের শেষভাগে ইংল্যান্ডের কৃষি, শিল্প, খনিজ সম্পদ আহরণ, যাতায়াত ব্যবস্থায় ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছিল সামগ্রিকভাবে তা বুঝানাে যায়। অর্থাৎ শিল্প বিপ্লব শব্দটি তারা ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেছেন।


অপর দলটি এসময়ে শুধু শিল্পোৎপাদন ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছিল শিল্প বিপ্লব শব্দটি দ্বারা শুধুতাকে বুঝাতে চেয়েছেন। অর্থাৎ এদলশব্দটিকে সীমিত অর্থে ব্যবহার করেছেন। আবার কোনাে কোনাে ঐতিহাসিক মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছেন।

তারা শিল্প বিপ্লব শব্দটি দ্বারা কৃষি ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল সেগুলােকে বুঝানাের চেষ্টা করেছেন। ফিলিস ডিন এদলের একজন উল্লেখযােগ্য ঐতিহাসিক। তাঁর মতে ইংল্যান্ডের অর্থনীতিতে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলােকে শিল্প বিপ্লব বুঝায়:


(ক) কুটীর শিল্পের পরিবর্তে যন্ত্রচালিত পুঁজিবাদী শিল্পের বিকাশ। অর্থাৎ পুঁজিপতি শ্রেণীর মূলধন দ্বারা কারখানা স্থাপন করে এতে শিল্প - পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা,


(খ) উৎপাদনের কাজে নতুন যন্ত্রপাতির ব্যবহার,


(গ) যন্ত্র চালানাের জন্যে বাষ্পের ব্যবহার,


(ঘ) কারখানায় পণ্য উৎপাদনের জন্যে শ্রমিক নিয়ােগ,


(ঙ) উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করে মুনাফা অর্জন এবং


(চ) মূলধন যােগানের জন্য ব্যাংক প্রভৃতি অর্থনৈতিক সংস্থার উদ্ভব। সংক্ষেপে শিল্প বিপ্লব বলতে বুঝায় পুঁজিপতি কর্তৃক কারখানা স্থাপন এবং এতে শ্রমিক ও বাষ্পচালিত যন্ত্রের সাহায্যে ব্যাপক হারে শিল্প পণ্য উৎপাদন। শিল্প বিপ্লবের সংজ্ঞা সম্পর্কে শেষােক্ত মতটি অধিকতর গ্রহণযােগ্য বলে মনে হয়। অবশ্য এ প্রসংগে আবার উল্লেখের প্রয়ােজন যে একটি অনুন্নত বা স্থবির অর্থনীতিতে হঠাৎ করে এবিপ্লবের সূত্রপাত হয়নি- অনেকদিন আগে থেকেই ক্রমে ক্রমে শিল্পোৎপাদন ক্ষেত্রে তথা সমগ্র অর্থনীতিতে ব্যাপক অগ্রগতির পথ সুগম হচ্ছিল।


(খ)  শিল্প বিপ্লবের প্রভাব (ইতিবাচক ও নেতিবাচক)


শিল্প বিপ্লব মানব সভ্যতাকে করেছে সুন্দর ও স্বপ্নময়। মেধা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে সময়, শ্রম হলাে সংক্ষিপ্ত ও সহজসাধ্য প্রতিকুল অবস্থা মােকাবেলা যেমন সম্ভব হয়েছে তেমনি জীবনের প্রতিটি অবস্থা মােকাবেলা যেমন। সম্ভব হয়েছে তেমনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানব জীবনের আশীর্বাদ স্বরূপইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।

নিম্নে ইতিবাচক ভূমিকা সমুহ তুলে ধরা হলাে


১. উৎপাদন বৃদ্ধি ও পেশী ও পশুশক্তির স্থলে যান্ত্রিক শক্তি ও প্রযুক্তির ব্যবহার বৃহদায়ন শিল্প গড়ে তােলে উৎপাদন বৃদ্ধি করে বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনগােষ্ঠীর চাহিদা পুরণে সক্ষম হচ্ছে।

২.জীবনমান উন্নয়ন ও প্রযুক্তির ব্যবহার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, চিত্ত বিনােদনের ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নয়ন সাধন করে বৈচিত্র্যময় জীবনের স্বাদ জনগণের পক্ষে গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে।


৩. অর্জিত মর্যাদা ও প্রযুক্তিভিত্তিক জীবন ব্যবস্থায় মানুষের বংশ মর্যাদার পরিবর্তে ব্যক্তির নিজস্ব জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও নৈপূণ্যের ভিত্তিতে মর্যাদা প্রদানের পদ্ধতি প্রবর্তিত হয়েছে। 


৪. যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও স্থলযান, নৌযান, বিমান, বেতার, টেলিভিশন, টেলিফোন, ট্যালেক্স , ফ্যাক্স, ইন্টারনেট আবিষ্কার হওয়ায় যাতায়াত ও যােগাযােগ ক্ষেত্রে বৈপবিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে।

শিল্প বিপ্লবের ফলে সামাজিক মনস্তুত্বিক, নৈতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব। পরিলক্ষিত হয়। উদ্ভুত সমস্যা ছিল সম্পূর্ণ নতুন, জটিল এবং প্রচলিত পদ্ধতিতে সমাধানের অযােগ্য। তাই বলা হয় “ শিল্প বিপ ব শুধু আশীর্বাদই নয়, অভিশাপও বটে।”

নিম্নে শিল্প বিপ্লবের নেতিবাচক প্রভাব সমূহ তুলে ধরা হলাে:


১. পেশাগত দুর্ঘটনাঃ শিল্প কারখানায় শক্তি ও যন্ত্রের প্রয়ােগ হওয়ায় পেশাগত দুর্ঘটনার পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নিরাপত্তাহীনতা সহ নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।


২.পারিবারিক ভাঙন শিল্প বিপ বের ফলে কৃষি শ্রমিক শিল্প শ্রমিকে পরিণত হওয়ায় পারিবারিক জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন 


৩. বস্তি উদ্ভবঃ শিল্প কারখানার আশে পাশে শিল্প শ্রমিকরা বসবাস করায় আবাসিক সংকট সৃষ্টি হওয়ায় বজ্ঞি। উদ্ভব ঘটে। যা পরিবেশ দূষণ ও অপরাধের অনুষঙ্গ।


৪ পরিবেশদূষনঃ শিল্প কারখানার বর্জ্য, নির্গত কালাে ধােয়া, ময়লা-আবর্জনা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি। করে। শ্রমিকরা আলাে বাতাস ও জানালাবিহীন দুর্গন্ধময় পরিবেশে কাজ করে ফলে নানা রােগে আক্রান্ত হয়।


(গ)  সমাজকর্ম পেশার বিকাশেশিল্প বিপ্লবের ভূমিকা


সমাজকর্ম পেশার বিকাশেশিল্পবিপ্লবের ভূমিকা গুলােনিন্মে আলােচনা করা হলােঃ প্রথমত, Putting-out প্রথার উদ্ভব হয়। মধ্যযুগে বস্ত্র উৎপাদিত হতাে তাঁতীদের ঘরে। তাঁতী কাঁচামাল সংগ্রহ করে বস্ত্র উৎপাদন করতাে এবং সরাসরি তা বাজারজাত করতাে। কিন্তু আধুনিকযুগের শুরুতে ব্যবসায়ীগণ তাঁতীদের কাছে কাঁচামাল সরবরাহ করে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এভাবে তাঁতীতার স্বাধীনতা হারায় এবং বণিক পুঁজিশিল্প পুঁজিতেরূপান্তরিত তাঁতীতার স্বাধীনতা হারায় এবং বণিক পুঁজিশিল্প পুঁজিতেরূপান্তরিত হয়।


দ্বিতীয়ত, কোন কোন ক্ষেত্রে পুঁজিপতিগণ তাঁতীদেরকে নিজ বাড়িতে উৎপাদন করতে না দিয়ে তাদেরকে। এক জায়গায় জড়াে করে উৎপাদন কাজে নিয়ােগ করে। তাঁতীদের প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে উৎপাদন কাজ তদারকি করার ক্ষেত্রে যেসব অসুবিধা দেখা।

তৃতীয়ত, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি সাধিত হয়। সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য পরিবর্তন ছিল ফ্লাইয়িং শাটল ( ঋষুরহম ঝর্যঃঃষব) নামক এক ধরনের বৈজ্ঞানিক মাকুর প্রবর্তন। এটি ১৭৩৩ সালে জন কে সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন। এটি যান্ত্রিক উপায়ে পরিচালিত হতাে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির উল্লেখযােগ্য উন্নয়ন সম্ভব হয়েছিল। এ প্রসংগে উল্লেখ্য যে, ১৬৬০ থেকে ১৭২৯ সালের মধ্যে অনিক মরু কুর প্রবর্তন। মােট ২৭০ টি উৎপাদন কৌশল সরকারি অফিসে নিবন্ধিত হয়েছিল।


 (ঘ) সম্ভাব্য ৪ র্থশিল্প বিপ্লবের পরিবর্তিত দিক বৃদ্ধি


১।প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি আসছে। যেগুলাে আগে বাজারে এসেছে সেগুলােও উন্নত হচ্ছে ক্রমানয়ে । জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে। এগুলাে দিনকে দিন তথ্যের সহজলভ্যা বৃদ্ধি করাচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। যা শিল্প বিপ্লবের প্রভাব।


২াধীরে ধীরে বৈশ্বিক যােগাযােগ ব্যবস্থা উন্নত ও দ্রুততর হচ্ছে। জ্ঞান অর্জন ও জ্ঞান দানের সিস্টেমটাই পাল্টে দিচ্ছে। জ্ঞানের অর্জনের পাশাপাশি দক্ষতা অর্জনও সমান গুরুত্ব পাচ্ছে বিশ্বময় পরিবর্তন হচ্ছে। পাঠ্যপুস্তক। গুরুত্ব পাচ্ছে নতুন উদ্ভাবন। পরিবর্তনের জন্য নতুন নতুন স্কিল সামনে নিয়ে আসছে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব। সে গুলাের আলােকেই পরিবর্তনের দিকে এগােচ্ছে। পুঁতিগত বিদ্যার চেয়ে বাস্তব জ্ঞান/দক্ষতার চাহিদা সব ক্ষেত্রে বৃদ্ধি।


৩.বিপ্লবের প্রভাবে সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যক জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি লক্ষ্যণীয়। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখন আগের যে কোনাে সময়ের চেয়ে বেশি। অনলাইন মাধ্যমে)। ইমাে, হােয়াটস এপ্স, ম্যাসেজ্জার কল বিগত বছরগুলাে থেকে আয় ও ব্যবহারকারীদের দিক থেকে এগিয়ে।


৪। রূৰ্বসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখন দোকান বুকিং, অগ্রিম টাকা প্রদান, ভাড়া ইত্যাদি। 1 বাজার ব্যবস্থা এখন অনলাইন মাধ্যমেই হয়। ইউরােপে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক মার্কেট ক্রেতা সংকটে ভুগছে (আগের তুলনায় )। এই পরিবর্তনের জোয়ার ইউরােপের গণ্ডি পেরিয়ে আমাদের এখানেও পড়েছে। আজ থেকে দুই তিন বছর আগরে বাংলাদেশের কথা যদি বিবেচনায় নেওয়া যায়, সেখানে হয়তাে কিছুই-কমার্স মাকের্ট এর নাম দেখতে পাব। কিন্তু এখন তা এমনই বেড়েছে যে খােলা চোখে লক্ষ্য করার মতাে। তার জন্য গুগল না ঘটলেও চলবে। বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে ই-কর্মাস মার্কেটগুলাে বিজ্ঞাপন থেকে আয় করেছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। ১৩৩৫৭১ টি অনলাইনভিত্তিক ওয়েব সাইট থেকে | যা ২০২১ সালের মধ্যে পৌঁছাতে পারে ৭০ বিলিয়ন বা ৭ হাজার কোটি টাকায়।।


৫.চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব পড়েছে মেডিকেল সাইন্স সেক্টরে। নিরাপদ উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর একবিংশ শতাব্দির জনসাধারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে জটিল রােগের চিকিৎসা সম্ভব। হচ্ছে। যা শিল্প বিপ্লবের প্রভাব।


৬। কৃষিক্ষেত্রেও রয়েছে এর প্রভাব । গবেষকরা চেষ্টা চালাচ্ছেন বায়াে ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অনেকটাই সফল। নতুন নতুন কৃষিজ বীজ উদ্ভাবন, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানাে বড় চ্যালেঞ্জ TRobotic sprayers মতাে প্রযুক্তি এখন কৃষি ক্ষেত্রে নিয়মিতই ব্যবহার হচ্ছে। জিন প্রযুক্তি, থ্রিডি পেইন্টিং, কোয়ান্টাম কোম্পিউটিং, ব্লগ চেইন এছাড়াও অলনাইন মাধ্যমে আউটসােসিংয়ের কাজগুলাে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কাজ। এরকম অনেক কিছুই বলে লেখা দীর্ঘ করা যাবে। আমি, আপনি যেসব আধুনিক প্রযুক্তি গত সুবিধা ভােগ করছি সেসব অবশ্যই ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কল্যাণের জন্যই।



Post a Comment

0 Comments